প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলের কিছু মৌলিক আদর্শিক খুঁটি থাকে। সে আদর্শিক খুঁটির ভিত্তিতে পলিটিকাল স্পেকটার্মে বিভিন্ন দলের স্থান হয়। যারা রক্ষনশীল ধারার রাজনীতি করে তারা স্পেকটার্মের ডানে থাকে, যারা প্রগতিশীল ধারার রাজনীতি করে তারা স্পেকটার্মের বামে থাকে।
যারা সামরিকভাবে এবং সামগ্রিকভাবে রক্ষণশীল, তারা উগ্র ডান/কট্টর জাতীয়তাবাদী/ ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল। এরা চায় জনগণের জীবনে রাষ্ট্রের ব্যাপক হস্তক্ষেপ, আইন-কানুন যেন মানুষের ব্যক্তিগত জীবনেও হস্তক্ষেপ করতে পারে এমন ব্যবস্থা চায় এরা। এদের আদর্শ সরকার হয় বিশাল, এবং সর্বময় কর্তৃত্ববাদী। যদিও এরা বলে এদের আইন এবং আদর্শ অনুযায়ী বিশেষ ধর্মের ঈশ্বর সর্বময় ক্ষমতাধর। এরা দাবি করে এরাই ঈশ্বরের আইন বাস্তবায়ন করছে। উদাহরণ হিসাবে দেখা যায় জামায়াতে ইসলাম, বিজেপি, আমেরিকার রিপাবলিকান পার্টি ইত্যাদি। এরা বিভিন্ন ধর্মের হলেও এদের কর্মপন্থা একই।
স্পেকটার্মের অন্য প্রান্তে যারা তারাও সামরিকভাবে এবং সামগ্রিকভাবে প্রগতিশীল। এরা চায় ছোট সরকার, যা less governing, যা নাগরিককে ব্যক্তিস্বাধীনতা দেয়। এরা যদিও সমান অধিকারের কথা বলে, কিন্তু এরা মূলত চায় সাম্যবাদী ব্যবস্থা। অর্থনৈতিক দিক থেকে এরা আগ্রাসী। ব্যক্তিমালিকানার বিলুপ্তি, শ্রমিক অধিকার, নারীর অধিকার ইত্যাদির নামে এরা মূলত ধণিক শ্রেণির বিরোধী। এদের আইন কোনো ঐশ্বরিক উৎস থেকে আসে না। এরা মার্ক্স-এঙেলসের আইনে বিশ্বাসী, আর সে আইনকেই এরা ঐশ্বরিক জ্ঞান করে। বাস্তবে এমন দল খুব কমই সফল হয়েছে। এরা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ব্রাত্য। যেখানেই এদের শাসন কায়েম হয়েছে, সেগুলো শান্তিপূর্ণভাবে হয় নি। হয়েছে সশস্ত্র বিপ্লবের মাধ্যমে।
তো, এই হচ্ছে পলিটিকাল স্পেকটার্মের অবস্থা। যে যত বেশি কট্টর রক্ষনশীল সে তত বেশি ডান, যে যত বেশি কট্টর প্রগতিশীল সে তত বেশি বাম।
এই আলোচনার প্রেক্ষিতে আওয়ামীলীগের অবস্থান আসলে কোথায়? আওয়ামীলীগ কি ডান? নাকি বাম? ডান ঘেঁষা, নাকি বাম ঘেঁষা?
সোহরাওয়ার্দীর মুসলিম লীগ (যা থেকে আওয়ামীলীগের জন্ম) সে ছিল ভারতবর্ষের মুসলিমদের দল। মুসলিমরা সংখ্যালঘু থাকায় এরা নিজেদের কখনোই কট্টরপন্থী রক্ষণশীল দাবি করে নি। তবে তারা আদতে ডানপন্থী রাজনীতিই করতো। ভারতবর্ষ ভাগের কালে এরা আলাদা মুসলিম রাষ্ট্রের জন্য আন্দোলন করেছিল। অপরপক্ষে কাজ করে যাচ্ছিল হিন্দুত্ববাদী আরএসএস। এরা মূলত একই মূদ্রার দুই পিঠ ছিল। আদর্শিকতার ক্ষেত্রে।
আওয়ামীলীগের শেখ মুজিব মুসলিম লীগ করা অবস্থায় কলকাতার হিন্দু-মুসলমান দাঙ্গায় সরাসরি অংশ নিয়েছিলেন। তাদের ইচ্ছা ছিল অবিভক্ত ভারতে মুসলিমরা হিন্দুদের হাতে মার খাবে এই ধারণাবলে মুসলিমদের জন্য আলাদা দেশের দাবিকে ন্যায্যতা দেয়া। মুহাম্মদ আলী জিন্নাহর সাথে মুজিবের তফাৎ, তখন, ছিল শুন্য! দু জনেই মুসলিম জাতীয়তাবাদী নেতা ছিল।
দেশভাগের পর পাকিস্তানিরা যখন নিজেদের শ্রেষ্ঠত্বের ভ্রম থেকে বাঙালিকে অগ্রাহ্য, বঞ্চিত আর শোষণ করে যাচ্ছিল তখন মুজিব তার ভুল বুঝতে পেরে মধ্যম বামপন্থী রাজনীতি করতে শুরু করেন।
“মধ্যম বামপন্থী” মানে কী আসলে?
মধ্যম বামপন্থী মানে হচ্ছে ডান না, কিন্তু বামও না, মাঝামাঝি একটা আদর্শ ধারণ করা। এই অবস্থান একটা বিপদজনক ব্যাপার। কারণ এখানেই লোকরঞ্জনবাদের জন্ম হয়। পূঁজিবাদী ব্যবস্থায় শ্রমিকদের শোষণ করা হয়, এটা সবারই জানা। লোকরঞ্জনবাদীরা এই শ্রমিকদের আবেগকে কাজে লাগিয়ে রাজনীতি করতে পারে খুব সহজে। মুজিবের এই ক্ষমতা ছিল।
তিনি বামদের সহ্য করতে পারতেন না। মাওলানা ভাসানীকে তিনি চায়নিজ মোল্লা ডাকতেন। কিন্তু মুজিবের বাসায় মাও সেতুংয়ের ছবি ঝুলতো! এই দ্বিচারিতা নিয়ে মুজিব বেঁচে ছিলেন।
বাংলার মানুষ যখন নিজেদের দেশেই নিজেদের শোষিত হিসাবে আবিষ্কার করলো তখন মুজিব আবির্ভূত হলেন তাদের নেতা হিসাবে। কলকাতার দাঙ্গার নায়ক মুজিব এখন সেক্যুলার নেতা! তিনি ধর্মীয় রাজনীতির বিরুদ্ধে, তিনি কর্তৃত্ববাদী শাসনের বিরুদ্ধে।
এই অবস্থানেই তিনি দেশ স্বাধীন করলেন। দেশ স্বাধীন হবার পর তিনি হয়ে গেলেন বামপন্থীদের ত্রাস! তিনি নতুন বুর্জোয়া শ্রেণির সমর্থনে বাংলাদেশের নেতা হয়ে গেলেন। আর বামপন্থীদের তাড়িয়ে বেড়াতে লাগলেন সারা দেশে। রক্ষীবাহিনী বানিয়ে বামদের শায়েস্তা করা হলো!
কিন্তু মুজিব বামপন্থার আদর্শ নিজের মধ্যে স্থাপন করে নিলেন। তিনি স্বাধীনতার মূলনীতিতে সমাজতন্ত্র নিয়ে আসলেন, আর আসল সমাজতন্ত্রীদের বিরুদ্ধে পুলিশ আর রক্ষীবাহিনী লেলিয়ে দিলেন। দেশের প্রচলিত ব্যবস্থাকে রাতারাতি পালটে ফেলে তিনি যে জগাখিচুড়ি বানিয়েছেন তা বলা বাহুল্য! রক্ষণশীল পাকিস্তানি আমলাতন্ত্রে অভিজ্ঞ লোকেদের এনে তিনি সমাজতন্ত্রী বানিয়ে ফেলতে চাইলেন রাতারাতি। সমাজতন্ত্র নিয়ে তার নিজের দলের লোকেদেরই সমস্যার শেষ নাই!
যেখানে তাজউদ্দিন আহমদের মত সমাজতন্ত্রী লোকের স্থান হয় নাই, কিন্তু মোশতাকের মত রক্ষণশীল লোকে হয়ে গেল সমাজতন্ত্রী! যেখানে আসম আব্দুর রব, সিরাজুল আলম খানের মত সমাজতন্ত্রীদের স্থান হয় না, কিন্তু পেটি বুর্জোয়া শেখ মনি দলের সর্বেসর্বা হয়ে ওঠেন!
বাকশাল ঘোষণার পর লাখ লাখ লোক বাকশালে যোগ দেয়ার জন্য আবেদন করে। তাদের কতজন আদৌ বাকশাল বা সমাজতন্ত্র বুঝেছিল? শেখ মুজিবের কাছে আদর্শিকভাবে যোগ্য ব্যক্তির চেয়ে সংখ্যাই কি বড় ছিল?
আওয়ামীলীগের নিজস্ব আদর্শ বলতে কিছুই নাই। তাদের আদর্শ কংগ্রেস, আরএসএস, মুসলিম লীগ, সমাজতান্ত্রিক দলগুলো থেকে ধার করা। এমন দল খুবই বিপদজনক কারণ আদর্শের খুঁটি যাদের থাকে না তারা স্বার্থের কারণে সব কিছুই বিক্রি করে দিতে পারে।
16 Responses
ব্লগার নাস্তিকরা মুসলমানদের নিয়ে এতো মাথা ঘামায় কেনো।
মুসলমানদের নিযে যে ব্লগার এইসব খারাপ খারাপ লেখা লেখছেন থাকে কিন্তু যেখানেই পাবে সেখানেই শেষ করে দেব।
রোহিঙ্গাদদের নিয়ে ব্লগারদের এইরকম লেখা মেনে নেওয়া যায় না।ব্লগারদের এইরকম লেখা বন্ধ করতে হবে
আমি এই লেখার সাথে একমত পোষন করছি।
রোহিঙ্গাদের নিয়ে ব্লগারদের এই রকম লেখা বন্ধ করতে হবে অনথায় পরিস্থিতি আরো খারাপ হবে।
শুওরের বাচ্চা ব্লগাররা এইরকম লেখা ব্ন্ধ কর না হলে তোকে আমি শেষ করে দেবও
শুওরের বাচ্চা নাস্তিক ব্লগার মূত্যর জন্য অপেক্কা কর।
একজন ব্লগারের লেখাকে তো আমি খারাপ কিছু দেখছি না।তার এই লেখা যুক্তিসংগত বলে আমি মনে করি।
ব্লগার যা লেখা লেখে নাও তোমার দিন শেষ।
hinduder roti eto dorod keno Bhai apner , buglam na
mind your language brother
বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর হামলায় আমি দু:খ প্রকাশ করছি কারন।বাংলাদেশে একের পর হামলা হচ্ছে হামলা সাথে জঙ্গি সম্পকতা কথা বলা হলেও। আমি তার সাথে দ্বিমত। কারণ এই হামলার মূল কারন হলো নাস্তিক ব্লগাররা তারা তাদের ধমের উপর আঘাত দিয়ে যা ইচ্ছে তাই করে যাচ্ছে। যার কারনে আমি মনে করি হামলার মূল হোতা ব্লগার নাস্তিকরা।এদেরকে এই দেশ থেকে বিতারিত করা দরকার।
who are you.
ধর্ম যার যার উৎসব সবার এই বলে যদি মুসলাম হিন্দুধমের উৎসব পালন করে তাহলে তো সাম্পদায়িক হিংসা বিধ্বেষ সৃষ্টি হবেই।বতমানে ব্লগার নাস্তিকরা হিন্দুদের পূজায় গিয়ে মুসলাম ধমের উপর আঘাত সৃষ্টি করছে। এতে করে আমি মনে করে দিন দিন জঙ্গি হামলা আরও গতিশীল হয়ে উঠছে। এই সব ব্লগার নাস্তিক দের বিরুদ্ধে আইনআনুক ব্যাবস্থা নিতে হবে।
জঙ্গিবাদ নিপাক যাক বাংলাদেশ শান্তি পাক।এই শ্লোগান দিযে আজ সারা বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাড়াতে হবে।
শুওরের বাচ্চা কুওার বাচ্চা ব্লগার নাস্তিকদের কারণে আমাদের এই প্রানপ্রিয় দেশ বাংলাদেশ আজ হুমকির মুখে।এই ব্লগারদের কারণে আজ দিন দিন আজ জঙ্গি হামলা সৃষ্টি হচ্ছে। এই কুওার বাচ্চাদের গলা কেটে কেটে নদীতে ফেলে দিলে বাংলাদেশ কিছুটা হলেও।জঙ্গি হামলা কাছ থেকে মুক্তি পাবে।