শুরুর দিকে ধারণা করা হতো এইডস এসেছে সমকামীদের মাধ্যমে। এরও আগে ধারণা ছিল এইডস আফ্রিকা থেকে এসেছে বানরের সাথে যৌনসম্পর্কের মাধ্যমে। বলা বাহুল্য যে এই দুটি ধারণাই ভুল আর বর্ণবাদী। এইডসের ভাইরাস বানর থেকে মানুষের মধ্যে প্রবেশ করেছে ব্যাপারটা সত্য। কিন্তু এর বিভিন্ন ব্যাখ্যা আছে।
ইউরোপীয় কলোনিয়াল শাসন আমলে আফ্রিকা খুব দ্রুত বর্ধিত হচ্ছিল। কলোনিয়াল মাস্টারদের কথামতো প্লান্টেশন বাড়ানোর জন্য বন্যভূমি উজাড় করা ছিল স্বাভাবিক ব্যাপার। এতে করে মানুষ বন্যপ্রাণীদের আবাসস্থল নষ্ট করার পাশাপাশি তাদের খুব কাছাকাছি চলে গিয়েছিল। লক্ষ লক্ষ বছরের বিবর্তনীয় ইতিহাসে ভিন্ন হওয়া শারীরবৃত্তীয় ব্যবস্থা অন্য প্রজাতির ভাইরাসকে চিহ্নিত করতে পারে নি। বানরের রক্ত বা অন্যান্য বডিলি ফ্লুয়িড মানুষের সংস্পর্শে আসায় এই ভাইরাস মানুষের মধ্যে এসে থাকতে পারে। অথবা এই ভাইরাস হয়ত তৃতীয় কোনো প্রাণীর মাধ্যমে মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে থাকতে পারে। বাদুড় এমন একটি প্রাণী।
এছাড়াও আফ্রিকার কিছু ট্রাইব বুশ-মিট খায় যা মূলত হচ্ছে বানর, বেবুনদের মাংস। এখান থেকেও ভাইরাস মানুষের শরীরে প্রবেশ করে থাকতে পারে।
যেকোন যৌনসম্পর্কের মত সমকামী সম্পর্কেও যৌনরোগের ঝুঁকি থাকে। তবে এসব ঝুঁকির পেছনে আরো কিছু ফ্যাক্টর কাজ করে থাকে।
১) অনিরাপদ যৌন সম্পর্ক- অনিরাপদ যৌনসম্পর্ক সকল সেক্সুয়াল অরিয়েন্টেশনের জন্যেই ঝুঁকিপূর্ণ। এক গবেষণায় দেখা গেছে কনডম ব্যবহার করে স্থাপিত যৌন সম্পর্কে ১.৪% লোকের এইডস সংক্রমণ হয়েছে।
২) সঙ্গী নির্বাচনে সচেতনতা- অস্ট্রেলিয়ার গণিকালয়ে গণিকাদের নিয়মিত টেস্ট করাতে হয় কোনো যৌনবাহিত রোগ আছে কি না তা নিশ্চিত করতে। তাদের সচেতনতা বহু প্রাণ বাঁচায়। এছাড়াও যৌন মিলনে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হয় তাদেরই। সাধারণ সম্পর্কেও তাই সঙ্গীর ব্যাপারে সততার সাথে আলাপ করে নিলে যৌনরোগের ঝুঁকি কমে।
৩) টেস্টিং- সিডিসির রিকমেন্ডেশন হচ্ছে সবার জন্যেই এইচআইভি টেস্ট করানো। এর কোনো বিকল্প নেই।
৪) রোল রিভার্সাল- সমকামী দম্পতিরা প্রায়শই যৌনসম্পর্কে “জায়গা” বদলান। এটি এইডস হওয়ার অন্যতম কারণ বলে মনে করেন অনেক গবেষক।
আমাদের কিছু সচেতনতাই পারে আমাদের এইডসের মত রোগ থেকে বাঁচাতে, এবং একই সাথে আমাদের উপর থেকে এই অপবাদ ঘুচাতে।