মুসলমান অভিবাসীদের ইসলাম প্রচারের বিভিন্ন কূট পদ্ধতি

দরিদ্র বা যুদ্ধবিধ্বস্ত মুসলিম দেশগুলো থেকে আসা মুসলমান অভিবাসীদের ইসলাম প্রচারের ৩ টি নতুন ধরণের কর্মকান্ড ইদানিং ইয়োরোপ আমেরিকার বড় বড় শহরগুলোতে খুব চোখে পড়ে।

১. “আই এম এ মুসলিম, গিভ মি এ হাগ।”- লেখা প্লেকার্ড হাতে নিয়ে চোখে কাপড় বেঁধে শহরের কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে থাকা।
সব মুসলমান খারাপ নয়, সম্ভবত এমনটা প্রমাণ করাই তাদের উদ্দেশ্য। আর তা প্রমাণ করার জন্য ইয়োরোপ আমেরিকায় এসে কাফের নাসারাদের আলিঙ্গন তাদের খুব প্রয়োজন।
আমার প্রশ্ন হচ্ছে,- নিজের দেশে থাকতে এসব মুসলমানরা স্বয়ং নিজ ধর্মের লোকেদের সঙ্গে আলিঙ্গন না করে আজীবন শিয়া-সুন্নি-আহমদিয়া-মোহম্মদিয়াদের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত থাকেন কেনো? সারা বিশ্বে শাম্তি স্থাপন করার আগে নিজের ঘরে শান্তি স্থাপন করা কি জরুরী নয়?

২. আরেক ধরণের প্লেকার্ড হাতে দাড়ি-টুপিওয়ালা মুসলমানদেরকে শহরে দেখা যায়,- “আই এম এ মুসলিম, আস্ক মি ইফ ইউ ওয়ান্ট টু নো এবাউট ইসলাম।”
এরাও অভিবাসী মুসলমান এবং কথা বললে দেখা যায়- এরা কোনো না কোনো দরিদ্র আর অশিক্ষিত মুসলিম দেশের নাগরিক।
আমার প্রশ্ন হচ্ছে,- বিশ্বের সবচেয়ে অশিক্ষিত আর অপেক্ষাকৃত অসভ্য একটা দেশের নাগরিকদের কাছ থেকে, যে দেশের বেশীর ভাগ মানুষই এখনো লিখতে পড়তে পারে না, যারা এখনো মাতৃভাষায় কোরাণ পড়ে দেখেনি, তারা কি বিশ্বের সবচেয়ে শিক্ষিত আর সভ্য দেশগুলোতে এসে ইসলাম শিক্ষা দেয়াটা হাস্যকর নয়? সারাক্ষণ ইন্টারনেট ব্যাবহারকারী আর প্রচুর পাঠাভ্যাসের একজন ইয়োরোপিয়ান এখনো কোরাণ বা ইসলাম সম্পর্কে জানে না,- একজন ইরাকী, সিরিয়ান বা তিউনেশিয়ান আশ্রয়প্রার্থীকে ভাবতে দেখলে আপনার কেমন অনুভূতি হবে?

৩. “ইসলামী রিসার্চ সেন্টার” নামে নতুন এক ধরণের মসজিদ নির্মাণের সংস্কৃতি শুরু হয়েছে ইয়োরোপ আমেরিকায়। মসজিদের সঙ্গে এই রিসার্চ সেন্টারের মূল পার্থক্য হচ্ছে,- সৌদি সরকারের অনুদানে নির্মিত এসব সেন্টারে একটা ছোটো ইসলামী পাঠাগার থাকে, সেখানে থাকে কোরাণের অনুবাদ আর কিছু ইসলামী পুস্তক। নারীরাও সেসব সেন্টারে প্রবেশ করতে পারেন। মুসলিম কমিউনিটির নারী পুরুষেরা প্রতি জুম্মাবার এই সেন্টারে একসঙ্গে নামাজ আদায় করার পর বিশাল বিশাল ডেকসিতে বিরানী রান্না করে খান।
মজার বিষয় হচ্ছে, মুসলমানরা সেই রিসার্চ সেন্টারে অন্যান্য ধর্মাবলম্বী বা কাফের নাসারাদেরকেও দাওয়াত করেন। যে কেউ ইসলাম সম্পর্কে জানার জন্য, মুসলমানদের সঙ্গে ধর্মীয় আলোচনা করার জন্য ওজু ছাড়া আর নারীরা বোরখা হিজাব ছাড়াও এসব সেন্টারে প্রবেশ করতে পারেন। ইসলাম আর মসজিদ সম্পর্কে অমুসলমানদের ভীতি দূর করাই হয়ত এসব অভিবাসী মুসলমানদের উদ্দেশ্য। খুবই ভালো উদ্দ্যোগ, সন্দেহ নাই।
কিন্তু, আমার প্রশ্ন হচ্ছে,- বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তানসহ বিশ্বের যেসব মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে লক্ষ লক্ষ মসজিদে নারী আর ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের প্রবেশই নিষেধ, কিংবা যেখানে প্রতি জুম্মবার বোমা ফোটে, সেসব মুসলিম দেশে এ ধরণের ইসলামী রিসার্চ সেন্টার স্থাপন করা কি আরো বেশী জরুরী নয়? আর ইয়োরোপ আমেরিকার নাগরিকেরা কি মসজিদ বা ইসলাম কি জিনিস- তা জানে না? ইসলাম সম্পর্কে জানতে হলে সারা বিশ্বের মুসলমানদের আচরণ পর্যবেক্ষণ করাই কি যথেষ্ঠ নয়?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *